৯ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ২৫শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ২রা জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি সকাল ১০:৫৮ শনিবার হেমন্তকাল
নির্বাচনের ঘণ্টা বাজার আগেই রাজনীতির দাবার বোর্ডে একটি বড় চালের ইঙ্গিত দিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি এখন আর কেবল নেতা-কর্মীদের আকাঙ্ক্ষা বা রাজনৈতিক গুঞ্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং এটি একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগোচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
এই লক্ষ্যের কথাই যেন প্রতিধ্বনিত হলো শুক্রবার, ২০২৫ সালের ২৪শে অক্টোবর। এদিন রাজধানীর গুলশানে নিজের বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে এক আলাপচারিতায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এমন এক আশার কথা শোনালেন, যা দলটির রাজনীতিতে নতুন করে প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি করেছে। তিনি স্পষ্টভাবেই ইঙ্গিত দেন, আসছে নভেম্বর মাসের মধ্যেই দেশে ফিরতে পারেন তারেক রহমান।
সাধারণত শীর্ষ নেতাদের এমন বক্তব্যকে রুটিন রাজনৈতিক মন্তব্য হিসেবে দেখা হলেও, সালাহউদ্দিন আহমদের কথার মধ্যে ছিল ভিন্ন এক সুর। তিনি বলেন, “তারেক রহমানের দেশে ফেরা মানে নির্বাচনের জন্য দলের অর্ধেক কাজ সম্পন্ন হয়ে যাওয়া।” এই একটি বাক্যই বিএনপির আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনার গভীরতা প্রকাশ করে। এর মাধ্যমে দলটি মূলত বোঝাতে চাইছে, তারেক রহমানের অনুপস্থিতিতে যে নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক সমন্বয়ের ঘাটতি অনুভূত হচ্ছিল, তার প্রত্যাবর্তন সেই শূন্যতা পূরণ করবে। remote leadership থেকে সরে এসে সরাসরি মাঠের নেতৃত্বে দলকে পরিচালিত করার একটি সুস্পষ্ট বার্তা এটি।
তবে এই ঘোষণার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো এর সময়কাল। নভেম্বর মাসকে বেছে নেওয়ার পেছনে কৌশলগত কারণ থাকতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। নির্বাচনের ঠিক আগে আগে তারেক রহমানের আগমন নেতা-কর্মীদের মনোবলকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাবে এবং দেশব্যাপী একটি আলোড়ন তৈরি করবে, যা নির্বাচনী প্রচারণায় বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
অবশ্য দিনক্ষণ এখনো রহস্যের মোড়কে ঢাকা। সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, সুনির্দিষ্ট তারিখ খুব শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে। এই রহস্য জিইয়ে রাখাও এক ধরনের রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে, যা প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার পাশাপাশি দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে প্রত্যাশা ও উত্তেজনা বাঁচিয়ে রাখবে।
সালাহউদ্দিন আহমদের এই মন্তব্য কেবল একটি সংবাদ নয়, বরং এটি আসন্ন দিনগুলোতে বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত। এখন দেখার বিষয়, এই ঘোষণা কি শুধুই বিএনপির একটি কৌশলগত চাপ, নাকি সত্যিই తెరের আড়ালে তারেক রহমানের ফেরার প্রস্তুতি সম্পন্ন হচ্ছে? উত্তর যা-ই হোক না কেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক আকাশ যে নতুন করে মেঘে ঢাকতে শুরু করেছে, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
Analysis | Habibur Rahman








